☰ |
|
আন্তর্জাতিক |
প্রতিবেদক দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, বাংলাদেশ বিষয়ে রাশিয়া যে বক্তব্য রেখেছে, সেটি তাদের ‘ধারাবাহিক অপব্যাখ্যার’ অংশ। সেই মুখপাত্রের বক্তব্য বাংলাদেশের গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে পাঠিয়েছেন ঢাকায় দেশটির দূতাবাসের মুখপাত্র স্টিফেন ইবেলি। তিনি জানান, তাদের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওই মুখপাত্র বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি ও রাষ্ট্রদূতের পিটার হাসের বৈঠক নিয়ে জাখারোভার ধারাবাহিক অপব্যাখ্যার বিষয় আমরা জানি। “বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না যুক্তরাষ্ট্র। একটি দলের উপর আরেক দলকে অধিক গুরুত্বও যুক্তরাষ্ট্র দেয় না।” গত বুধবার রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন তাদের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা। পরে মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্স-এ তার বক্তব্যের কিছু অংশ তুলে ধরা হয়। জাখারোভা বলেন, “দেশটির আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে ‘স্বচ্ছ ও অন্তর্ভূক্তিমূলক’ করার ছদ্মাবরণে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় প্রভাবিত করার ক্ষেত্র যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের প্রচেষ্টার বিষয় আমরা অব্যাহতভাবে তুলে ধরে আসছি। “আমাদের কোনো সন্দেহ নাই যে, বিদেশি ‘শুভাকাঙ্ক্ষীদের’ সহায়তা ছাড়াই জাতীয় শাসনতন্ত্রের বিধানমত ৭ জানুয়ারি ২০২৪ তারিখের সংসদ নির্বাচন স্বাধীনভাবে আয়োজনের সক্ষমতা বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের আছে।” গত বুধবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দপ্তরের ব্রিফিংয়ে বলা হয়, পিটার হাস বাংলাদেশে বিরোধী দলের একজন নেতার সঙ্গে বৈঠক করে সরকারবিরোধী আন্দোলনের পরিকল্পনা করেছেন। পরে মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্স-এ বক্তব্যের কিছু অংশ তুলে ধরা হয়। হাসের এই কার্যক্রমকে ভিয়েনা কনভেনশন না মেনে সার্বভৌম দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ‘নির্জলা হস্তক্ষেপ’ হিসাবেও তুলে ধরেন রুশ কর্মকর্তা। তিন দিন পর আসে যুক্তরাষ্ট্রের জবাব। তাদের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র এতে বলেন, “বাংলাদেশি জনগণ নিজেদের জন্য যেটা চায়, আমরাও তাই চাই- শান্তিপূর্ণ উপায়ে অনুষ্ঠিত অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন।” শান্তিপূর্ণ উপায়ে অনুষ্ঠিত অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের অভিন্ন লক্ষ্যকে সহযোগিতার অংশ হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা সরকার, বিরোধীদল, নাগরিক ও অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে থাকে জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ভবিষ্যতেও এটি অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশি জনগণের মঙ্গলের জন্যই এই কাজ করা হয় বলেও দাবি করা হয় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। বাংলাদেশের নির্বাচন ও রাজনীতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার পরস্পরবিরোধী এই অবস্থান নতুন নয়। গত বছরের শেষ দিকে পিটার হাস ঢাকায় বিএনপির ‘নিখোঁজ’ নেতা সায়েদুল ইসলাম সুমনের বাসায় গিয়ে সরকারপন্থি অন্য একটি সংগঠনের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। এরপর ঢাকায় রুশ দূতাবাস এক বিবৃতিতে বলে, বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতিকে সব সময় মেনে চলায় রাশিয়া ‘দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’। এতে আরও বলা হয়, “বাংলাদেশের মতো দেশগুলো, যারা বহিঃশক্তির নির্দেশনার পরিবর্তে জাতীয় স্বার্থকে বিবেচনায় নিজেদের পররাষ্ট্র ও অভ্যন্তরীণ নীতি নির্ধারণ করে থাকে, তারাও একই রকমের দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ করে।” বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গত কয়েক মাসে ক্রমাগত বক্তব্য দিয়ে আসছে। অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে বাধা দিলে তার জন্য দায়ী ও তাদের স্বজনরা ভিসা পাবে না জানিয়ে আলাদা ভিসা নীতিও ঘোষণা করা হয়েছে। র্যাবের উপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা এবং বাংলাদেশের জন্য ওয়াশিংটনের নতুন ভিসা নীতির প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রের দূত মতিতঁস্কি বলেন, “কোনো দেশের এককভাবে দেওয়া স্যাংশনকে রাশিয়া স্বীকৃতি দেয় না। আমরা শুধু জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের দেওয়া স্যাংশনকে স্বীকৃতি দিয়ে থাকি। এককভাবে কোনো স্যাংশন দেওয়া ‘অবৈধ’।” বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে রাশিয়া, চীন ও ভারতের অবস্থান একই। তিনটি দেশই জানিয়েছে, বাংলাদেশে কীভাবে নির্বাচন হবে, সেটি দেশের জনগণের বিষয়। বাইরের কোনো দেশের হস্তক্ষেপের বিরোধী তারা। |
আন্তর্জাতিক |
সর্বশেষ |
xxxxxxxxxxxxxxxxx |