☰ |
|
মুক্তমত |
রিয়াজুল হক
১৯৯৭ সালের কথা। রশিদা বেগম মানুষের বাড়ি বাড়ি ছুটা বুয়ার কাজ করে। মধ্য বয়সী এই নারীর স্বামী রিক্সা চালায়। রশিদা যে বাসায় কাজ করত, সে বাড়ির গৃহকর্ত্রী রশিদাকে ব্যাংকে ডিপিএস খোলার পরামর্শ দিল। এতে করে কিছু টাকা ব্যাংকে জমা হবে। পরে একটা কাজে আসবে। সে সময় মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্নবিত্ত পরিবারের মানুষ ডিপিএস খোলার জন্য ব্যাংকের কাউন্টারে লাইন ধরে দাড়িয়ে থাকত। বলা যায়, ডিপিএস খোলার হিড়িক পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু সমস্যা ছিল অন্যখানে। রশিদা কিংবা তার স্বামী শুধু নাম লিখতে পারত। আর কিছুই জানতো না। যাই হোক, সেই বাড়ির গৃহকর্তা রশিদার স্বামীকে নিয়ে সোনালী ব্যাংকে যেয়ে সকল ফরম পূরণ করে মাসিক ৫০০ টাকার একটি ডিপিএস খুলে দিলেন। রশিদার স্বামী লেখাপড়া জানা প্রতিবেশীদের কাছ থেকে টাকা জমার ফরম পূরণ করে প্রতি মাসে ৫০০ টাকা ব্যাংকে জমা দিয়ে আসতো। এভাবে ১০ বছর প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে জমা করলেন। ১০ বছর পূর্ণ হওয়ার পর ২০০৭ সালে সেই টাকা দিয়েই ছেলেকে সৌদি আরবে পাঠালেন। এখন তাদের অবস্থা পুরোপুরি পরিবর্তন হয়ে গেছে। রশিদা বেগমকে আর মানুষের বাসায় কাজ করতে হয়না। স্বামী একটা মুদি দোকান চালায়। অভাব অনটন গত ১৩ বছরে আর স্পর্শ করতে পারেনি রশিদার পরিবারকে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যদি ডিপিএস টা না থাকতো, তবে রশিদার পরিবারের পক্ষে একসাথে লক্ষাধিক টাকা জমানো কখনো সম্ভব হতো না। সামান্য করে সঞ্চয় একসময় তাদের ভাগ্য ফেরাতে সহায়তা করেছে। যে যতটুকুই আয় করুন, প্রত্যেকের উচিত কিছু সঞ্চয় করা। কারণ সঞ্চয় ছাড়া আয় মূল্যহীন। লেখক: রিয়াজুল হক, অর্থনৈতিক বিশ্লেষক এবং যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক। |
মুক্তমত |
সর্বশেষ |
xxxxxxxxxxxxxxxxx |