কলাম
  রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে মিয়ানমারের দ্বিচারিতা
প্রতিরক্ষা সামর্থ্য ছাড়া কূটনৈতিক সফলতা অর্জন সহজ নয়
  10, October, 2020, 5:16:4:PM

সৈয়দ মুশফিকুর রহমান
বিশ্বের যে কোনো দেশের অর্থনীতি বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে সামরিক বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির ধারণা অনেক পুরনো। প্রতিরক্ষা সামর্থ্যের সঙ্গে একটি দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি ও কূটনীতি অনেক বেশি সচল থাকে। দেশের ভৌগোলিক অখন্ডতা ও অর্থনীতির আকার বৃদ্ধির সাথে সেনা সামর্থ্য কতটুকু হওয়া দরকার, তা বর্তমানে ভূরাজনীতির দিকে তাকালে সহজে অনুমান করা যায়। বর্তমান বিশ্ব রাজনীতির প্রেক্ষাপটে আর্থসামাজিক উন্নয়নের সঙ্গে বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জনগণের নিরাপত্তা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি সব বিষয়ে জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়ে প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা এখন সময়ের দাবী। বর্তমান বিশ্বে যার যত বড় অর্থনীতি, তার তত বড় সামরিক শক্তি। এ দুটি বিষয় একটির সাথে আরেকটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অন্যভাবে বললে বলা যায়, একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না থাকলে অর্থনৈতিক বিকাশ ও সামাজিক শৃঙ্খলা বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সামরিক শক্তি দুর্বল হলে বহিঃশক্তির ষড়যন্ত্র ততই ডালপালা গজাবে। দেশের অর্থনীতি ও জনগণের নিরাপত্তা ততই নাজুক হবে। জাতীয় নিরাপত্তা শক্তিশালী থাকলে বহিঃশক্তির যে কোনও বিশৃঙ্খলা ও বিভ্রান্তি সহজেই দমন করা যায়। সামরিক সক্ষমতা থাকলে দেশের যে কোন সংকটে কূটনৈতিক সফলতাও পাওয়া যায়।
রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও উগ্র বৌদ্ধদের অত্যাচারে প্রায় ১১ লক্ষ রোহিঙ্গা নাফ নদী পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের ভ‚খন্ড কক্সবাজারে পালিয়ে আসে। বাংলাদেশ নির্যাতিত রোহিঙ্গা শরনার্থীদের আশ্রয় দিয়ে বড় ধরণের মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন। দীর্ঘদিন থেকে এই বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্টিকে আশ্রয় ও ভরণ-পোষণ দিতে গিয়ে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বাংলাদেশ। ২০১৭ সাল থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পেছনে বাড়তি মনোযোগ দিতে সেখানে পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবিসহ বিভিন্ন বাহিনীর লোকজন নিয়োগ করতে হয়েছে৷ এর ফলে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ব্যয় করতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। রোহিঙ্গাদের পিছনে বিপুল পরিমান টাকা খরচ করতে গিয়ে বাজেটের উপর চাপ পড়ছে। রোহিঙ্গাদের জন্য বিদেশ থেকে যে পরিমান সহযোগিতা আসছে তা নিতান্তই অপ্রতুল। রাখাইন থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেওয়ায় গত বছর বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদার অব হিউম্যানিটি (মানবতার জননী) খেতাবে ভূষিত হয়েছিলেন।
রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে বর্তমান সরকার আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপিয় ইউনিয়নসহ পশ্চিমা দেশগুলো রোহিঙ্গাদের ফেরৎ নিতে মিয়ানমারের উপর চাপ অব্যাহত রেখেছে। ইসলামি দেশগুলোর সংগঠন ওআইসি রোহিঙ্গা প্রশ্নে বাংলাদেশের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক চাপ সত্বেও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অসম্মতির কারণে রোহিঙ্গা শরনার্থীদেরকে ফেরৎ পাঠাতে পারছেনা বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সরকার শান্তিপূর্ণ উপায়ে রোহিঙ্গা সমস্যার সামাধানে জোর দিচ্ছে। শরনার্থীদের শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসনে ২০১৭ নভেম্বরে নেফিডো‘র সাথে ৩০ দফা ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ নামে চুক্তি করলেও চুক্তির বাস্তবায়ন না করে কালক্ষেপন করছে মিয়ানমার। তাঁদের দ্বি-চারিতার কারনেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চুক্তি এখনও আলোর মুখ দেখেনি।
বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ কুটনৈতিক উদ্যোগকে মিয়ানমার সেনাবাহিনী পাত্তা দিতে আগ্রহী নয়। বাংলাদেশ যদি কুটনৈতিক তৎপরতার পাশাপাশি মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে কার্যকর হুমকি দিয়ে চাপের মধ্যে রাখতে পারলে পরিস্থিতি কিছুটা অনুকূলে আসতে পারতো বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। হুমকি মূলত যুদ্ধের জন্য নয়; ঠিক একটা তাৎক্ষণিক তৎপরতা আমাদের সীমান্তের মধ্যে নেয়া। তাহলে মিয়ানমার সেনাবাহিনী একটা ম্যাসেজ পেতো যে, ‘বাংলাদেশ সহজে ছেড়ে দিবে না।’ কিন্তু মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে কার্যকর হুমকি দেয়ার মতো শক্তি-সামর্থ্য বাংলাদেশের কতটুকুই-বা আছে? তবে কূটনীতির তৎপরতার পাশাপাশি দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে পারলে মিয়ানমারের সঙ্গে দর-কষাকষির জায়গাটা অনেক সহজ হতো বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা সামর্থ্যর চেয়ে মিয়ানমারের সামরিক শক্তি বেশি থাকায় রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের উদ্বেগকে পাত্তা দিতে চাইছে না মিয়ানমার। মিয়ানমার সেনাবাহিনী সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সম্পূর্ণ নির্মূল করার লক্ষ্যে ‘ক্লিনজিং পরিকল্পনা’ গ্রহণ করে। অথচ দীর্ঘদিন উর্দি শাসনে থাকা মিয়ানমার সেনাবাহিনী বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হলেও গোপনে প্রতিরক্ষা সামর্থ্য ও সেনা সরঞ্জামের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটিয়েছে তাঁরা। মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যা পাঁচ কোটি। সামরিক শক্তিতে বিশ্বে মিয়ানমারের অবস্থান ৩১ তম। দেশটির সেনা সংখ্যা পাঁচ লাখ ১৬ হাজার। আর ১৭ কোটি জনসংখ্যার দেশ বাংলাদেশের সেনা অবস্থান ৫৭তম। সামরিক বাহিনীর মোট সদস্য সংখ্যা দু‘লাখ পাঁচ হাজার। সূত্র : যঃঃঢ়//িি.িহঃানফ.পড়স (১৮ সেপ্টম্বর ২০১৭) তাছাড়া গ্লোবাল পাওয়ার ইনডেক্স ২০১৮ অনুযায়ী, বিশ্বে সামরিক শক্তিতে মিয়াানমারের অবস্থান যেখানে ৩১তম, বাংলাদেশের অবস্থান সেখানে ৫৭।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনে রোহিঙ্গা সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান হিসেবে পাঁচ দফা পরিকল্পনা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দফা গুলো হলো: ১) অনতিবিলম্বে এবং চিরতরে মিয়ানমারে সহিংসতা ও ‘জাতিগত নিধন’ নিঃশর্তে বন্ধ করা। ২) মিয়ানমারে জাতিসংঘের মহাসচিবের নিজস্ব একটি অনুসন্ধানী দল প্রেরণ করা। ৩) জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকল সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা বিধান করা এবং এ লক্ষ্যে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জাতিসংঘের তত্ত¡াবধানে সুরক্ষা বলয় গড়ে তোলা। ৪) রাখাইন রাজ্য হতে জোরপূর্বক বিতাড়িত সকল রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে তাদের নিজ ঘরবাড়িতে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা। ৫) কাফি আনান কমিশনের সুপারিশমালার নিঃশর্ত, পূর্ণ এবং দ্রæত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। রোহিঙ্গা ইস্যুর শান্তিপূর্ণ সমাধানে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই বক্তব্য ব্যাপক তাৎপর্যপূর্ণ। রোহিঙ্গা সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ভাষণ বিশ্ব নেতৃবিন্দের ব্যাপক প্রশংসা লাভ করে।
বিগত এরশাদ-বিএনপির শাসনামলে যৌক্তিক কারণ থাকার পরও বাংলাদেশে অজ্ঞাত কারণে সেনাবাহিনীর আকার ও সামরিক সরঞ্জাম বৃদ্ধি করা হয়নি। তবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্ব গ্রহণের পর সেনাবাহিনীর বাজেট বৃদ্ধিসহ অস্ত্র সরঞ্জাম বৃদ্ধি অব্যাহত রেখেছেন। আন্তর্জাতিক উদ্বেগ উপেক্ষা করে চীন থেকে দু‘টি সাবমেরিন ক্রয় বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বেড়েছে ঠিকই কিন্তু মিয়ানমারকে চ্যালেঞ্জ করার মতো সামর্থ্য বাংলাদেশের এখনও তৈরি হয়নি।
সামরিক শক্তি থাকায় ভারত হায়দরাবাদ, সিকিম ও কাশ্মীর দখল করার পরও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কূটনৈতিক সফলতা লাভ করে। যদিও কাশ্মীরে গণভোট প্রশ্নে জাতিসংঘের একটি প্রস্তাবনা নিয়ে পাক-ভারত বিরোধ দীর্ঘদিনের। গত বছর চীনের ‘দোকলাম’ মালভূমিতে দিল্লির পেশিশক্তির বিরুদ্ধে চীনের অনমনীয় সামরিক শক্তির কারণেই ডোকলাম থেকে ভারত পিচু হটে আসে। তবে ভারত গণচীনকে বুজিয়ে দিয়েছে, যে কোন আগ্রাসনের উপযুক্ত জবাব দিতে তৈরী আছে ভারত। বিভিন্ন ধর্ম ও জাতিগোষ্ঠিতে বিভক্ত ভারত সামরিক শক্তির বলে আজ অর্থনীতিতে উদীয়মান শক্তি। অভ্যন্তরীন বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন ও সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে সেনা শক্তি ব্যাবহার করেও অর্থনীতির শক্ত ভীত ধরে রাখতে পেরেছে। সব কিছুই সম্ভবপর হয়েছে শক্তিশালী সামরিক বাহিনী ও প্রতিরক্ষা নীতির কারনে।
জাপান ২য় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তার লক্ষে কাজ করে আসছে। অর্থনৈতিক পরাশক্তি জাপানের প্রতিরক্ষা দূর্বলতার সুযোগে রাশিয়া ‘কুরিল’ দ্বীপপুঞ্জ ও গণচীন ‘সেনকাক’ু দ্বীপে আগ্রাসন চালিয়ে দখল করে নেয়। জাপান শান্তিপূর্ণ কুটনৈতিক তৎপরতা চালিয়েও তাঁদের ভ‚খন্ড ফেরৎ নিতে ব্যর্থ হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ভয়াবহ পরিণতির পরে নিজেদের সামরিক সক্ষমতাকে অবজ্ঞা করে শান্তিপূর্ণ জাপান প্রতিষ্ঠায় মনোনিবেশ করলেও বর্তমানে সামরিক শক্তি বাড়ানোর দিকে মনোনিবেশ করে টোকিও। জাপান তার শক্তিশালী প্রতিরক্ষা গড়ার লক্ষে সামরিক বাহিনীর জন্য চলতি অর্থবছরে ৪ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের অতিরিক্ত বারাদ্ধ বাড়িয়েছে। যাতে অদূর ভবিষ্যতে রাশিয়া, চীন ও উত্তর কোরিয়ার দিক থেকে যে কোন সামরিক হুমকি সহজেই মোকাবিলা করতে পারে।
বর্তমান ভ-‚রাজনীতিতে সামরিক শক্তিতে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ভারত, তুরস্ক ও ইসরাইলের মতো দেশগুলো কুটনৈতিক সফলতার ক্ষেত্রে শতভাগ সফল। সামরিক শক্তির বলে ইসরাইল বিশ্ব জনমতকে তোয়াক্কা না করে ফিলিস্তিনের ভ‚মি দখল অব্যাহত রেখেছে। শুধু ফিলিস্তিনের ভ‚মিই নয়, সিরিয়া,জর্ডান, গাজা ও লেবাননের অনেক ভ‚মি দখল বজায় রেখে ঐ দেশগুলোর উপর বিমান হামলা করে জানমালের ব্যাপক ক্ষতি করছে প্রতিনিয়ত। তুরস্কও তাদের সামরিক শক্তি ব্যবহার করে সিরিয়া,ইরাক ও সাইপ্রাসের অনেক এলাকা দখল করে রেখেছে। কারণ তাঁদের শক্তিশালী সামরিক কুটনীতির কাছে জাতিসংঘ বা বিশ্ব সমাজ একেবারে অসহায়।
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে চীন ও রাশিয়ার প্রভাবকে কাজে লাগাতে পারলেই রোহিঙ্গা সমস্যা আলোর মুখ দেখতে পারে। মায়ানমারের সাথে চীন ও রাশিয়ার সম্পর্ক নতুন কিছু নয়; বিগত তিন দশক দেশ দু‘টি মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে সামরিক ও রাজনৈতিক সমর্থন যুগিয়ে আসছে। বিশ্বে ভূ-রাজনীতির নতুন সমীকরণে মিয়ানমারের পক্ষে চীন-রাশিয়ার সমর্থন অস্বাভাবিক কিছু নয়। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমেরিকা ও পশ্চিমা বিশ্বকে এই অঞ্চলে নাক গলালোর সুযোগ না দিতেই চীন-রাশিয়ার বিরোধিতা। বর্তমান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র নাক গলানোর সুযোগ পেলেই এ অঞ্চলে অস্থিরতার মাত্রা যে বেড়ে যাবে, তা সবাই অবগত। যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে ইন্ধন জোগাবে, এটা শতভাগ নিশ্চিত। কারণ ভারত, আমেরিকা, ইসরাইল একই মেরুতে অবস্থান করছে। এই ত্রিদেশীয় সমঝোতায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভবিষ্যতে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সুযোগ বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। মধ্যপ্রাচ্য ও আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা কারও অজানা নয়। সমস্যার সামাধান তো দূরের কথা, তাদের ভূমিকার কারণে পুরো মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাসের বিস্তার বেড়েছে শতগুণ।
বর্তমান সরকারের দূরদর্শিতার ফলে রোহিঙ্গা ইস্যুটি আন্তর্জাতিক পর্য্যায়ে ব্যাপক সাড়া পেয়েছে। আন্তর্জাতিক সমর্থনে বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সমস্যার একটা স্থায়ী সামাধান বের করতে পারবে বলে আশাবাদী সকলে। কুটনৈতিক তৎপরতা জোরদারের পাশাপাশি বাংলাদেশকে প্রতিরক্ষা সক্ষমতা উন্নয়নে জোর দিতে হবে। কারণ বর্তমান সময়ের বাস্তবতা হচ্ছে যার যত বড় সামরিক শক্তি তার গুরুত্ত তত বেশী। যে কোন দেশের কুটনৈতিক সফলতার বড় নির্ণায়ক শক্তি হচ্ছে সামরিক শক্তি।
সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জন করতে হলে সময় নিয়ে দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে হয়। আমরা শুধু সংকট সামনে এলেই চিন্তা করি; কিন্তু ভবিষ্যতে সংকট তৈরি হতে পারে তা বিবেচনা করিনা। কার্যকর পরিকল্পনা ও কৌশল না থাকার কারণেই বার বার সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। রোহিঙ্গা সমস্যাটি তার জ্বলন্ত উদাহরণ। এটা আমাদের বুঝেই সামনে অগ্রসর হতে হবে। চীন ও রাশিয়াকে দোষারোপ করে আমরা কোনো কিছু অর্জন করতে পারবো না। বরং আমাদের জন্য আরও বিপদ ডেকে আনতে পারে! দেশের প্রতিরক্ষা সামর্থ্য শক্তিশালী থাকলে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের একটি গুলি করারও সাহস পেত না। জাতীয় নিরাপত্তার আলোকে প্রতিরক্ষা বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে হবে। যে দেশের প্রতিরক্ষা সামর্থ্য যত বেশি শক্তিশালী, সে দেশের কূটনৈতিক সফলতার পাল্লা ততই বেশী। বিশ্বে এ সংক্রান্ত উদাহরণ ভ‚রি ভ‚রি আছে। দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা আরোও কী ভাবে বাড়ানো যায় সে বিষয়ে চিন্তা করতে হবে। মিয়ানমারের আচরণ ঔদ্ধত্যপূর্ণ। রাখাইনে মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে জাতিগত নিধনে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় বৌদ্ধরা। মিয়ানমারকে থামাতে হলে বাংলাদেশের কূটনৈতিক তৎপরতা আরো জোরদার করতে হবে। একবার কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে আমাদের ঝিমিয়ে পড়লে চলবে না, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হতে হবে।
লেখক : সাংবাদিক ও কলাম লেখক
প্রধান সম্পাদক, দৈনিক জাতীয় বাংলা



     কলাম
আগামীর সরকারের কাছে নাগরিকদের প্রত্যাশা
রাজনৈতিক আদর্শ কোথায়?
নেতৃত্ব যাবে কার হাতে
সাইবার নিরাপত্তা আইন: ‘নতুন মোড়কে পুরনো ওষুধ’
ফেসবুক ট্রায়াল এবং ঘৃণার রাজনীতি
ব্রিকসের সম্প্রসারণ
ডলারের একক আধিপত্য খর্বের মুখে
ভুল পরিকল্পনায় বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি বাড়ছে
ইউক্রেনে রুশ হামলার যৌক্তিকতা
রাশিয়াকে আরেকটি যুগোশ্লাভিয়া বানাতে মার্কিন ষড়যন্ত্র
কাবুলের পতন : একটি সমীক্ষা
সমন্বিত মুক্তিযোদ্ধা তালিকা গ্রহণযোগ্য নয় -আবীর আহাদ
  সর্বশেষ
জামিন পেলেন পিকে হালদারের বান্ধবী অবন্তিকা
ট্রাম্পের বিশৃঙ্খলাকে প্রত্যাখ্যান রিপাবলিকানদের
ওয়াশিংটনে নিকির কাছে ধরাশায়ী ট্রাম্প
দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশি দম্পতিকে গুলি করে হত্যা
রমজানে ৬০০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি হবে ঢাকার
বইমেলার সময় বাড়ল আরো দুই দিন
বাংলাদেশে মাদক, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের কোনো স্থান নেই: আইজিপি
নির্বাচনের পর ফের রাজপথে নামছে ইমরান খানের দল
রাখাইনে আরাকান আর্মির হামলায় ৮০ সেনা সদস্য নিহত
xxxxxxxxxxxxxxxxx